ব্রাহ্মণবাড়িয়া.প্রেসঃ-নিজস্ব প্রতিবেদক।টাকা দিলেই মামলা এফআইআর!!! এ কেমন পুলিশিং…!!ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই প্রথম এমন একটি হাস্যকর মামলা নিয়ে পুরো জেলা  শহড়ে হৈচৈ তুলপাড়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া.প্রেস- এর নিজস্ব প্রতিবেদকের কাছে শুধু অভিযোগই নয় প্রমাণ সহ এমন কিছু তথ্য আসে, যা অবাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই নই। গত ২৬ আগষ্ট ২০১৯ইং ব্রাক্ষণবাড়িয়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। দায়েরকৃত মামলা নং- ৭০।

সেই এজহারকৃত মামলায়, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম বিল্লাহকে- ১নং আসামী এবং জাতীয়  “দৈনিক খবর বাংলাদেশ” পত্রিকার ব্যুরো চীফ মো: নাসির উদ্দিনকে-৩নং আসামী করে ৮জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

এজহারে উল্লেখিত বাদীপক্ষের ৮জন কে সাক্ষী করে, উক্ত মামলায় স্বাক্ষরিত কাজী জামান মিয়া নিজে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

উক্ত এজাহার দায়েরকৃত মামলাটি তে স্পষ্টভাবে লিখিত, সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে কাজী জামান মিয়া শুদ্ধ স্বীকারে  পাঠ ও লিপিবদ্ধ করে নিজ নাম স্বাক্ষর করেন। যাহা এই মামলায় থাকা আসামিরা অনেকেই অবগত নয়।

মামলার ৩নং আসামী সাংবাদিক মো:- নাছির উদ্দিন মামলাটির সম্বন্ধে অবগত হলে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ- মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন (ওসি) সাহেবের নিকট ফোন করে উক্ত মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে (ওসি) সাহেব রাগান্বিত হয়ে বলে যাহা কিছু জানার বাদীর কাছ থেকে জানার জন্য। তৎপর বিষয়টি অবগত করেন মো:- নাসির উদ্দিন জেলা এসপি মহোদয়ের নিকট বলেন, স্যার আমি যদি অপরাধী হয় আমাকে খুঁজতে হবে না আমি নিজেই এসে উপস্থিত হব। মামলার এজাহারে থাকা উল্লেখিত সময়ে, বিশেষ জরুরী কাজে আমি সহ আরো কয়েকজন সাংবাদিক উক্ত সময়ে সদর থানার গেইটের ভিতরে  এএসআই নেয়ামত উল্লাহ ভাই উনার সাথে বেশ কিছুক্ষণ আলাপ ও হয়। জাহার প্রমাণ হিসেবে থানার সিসি ক্যামেরায় প্রমাণ করবে। অনুরোধক্রমে বিষয়টি নজর দেবেন। এমতাবস্তায় এসপি মহোদয় আশ্বাস দিয়ে বলেন, আমি বর্তমানে নবীনগর আছি বিষয়টি দেখছি।

উক্ত এজাহার দায়ের কৃত মামলায় স্বাক্ষরিত, কাজী জামান মিয়ার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে- এজাহারে লিখিত যেখানে ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়, আপনি কি তখন সেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন? বিশেষ করে আপনি কি উক্ত মামলার ৩নং আসামি মো:-নাসির উদ্দিনকে চিনেন? মামলার কাগজে তু  দেখা যাচ্ছে ৮জনকে আসামি করা হলো। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি?

এই প্রশ্নের জবাবে উক্ত মামলার স্বাক্ষরিত বাদী, কাজী জামান মিয়া বলেন- ভাই যখন মামলা হয় তখন আমি থানায় উপস্থিত ছিলাম না বা ঘটনাস্থলে ও ছিলাম না। আমি চিনিনা উনি কে, আমি জানিনা কেমন করে উনার নাম আসছে। উক্ত মামলার বিষয়টি সাক্ষীগণ আমাকে জানিয়েছেন। আপনি আমাদের সুহিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান- আজাদ হাচারি আঙ্গুর ভাইয়ের নিকট জানতে পারেন।

তৎপর উক্ত এজাহার দায়েরকৃত মামলার ৩নং সাক্ষী, চেয়ারম্যান আঙ্গুর হাজার এর নিকট জানতে চাওয়া হলে উনি বলেন- ভাই আমিও ঘটনাস্থলে ছিলাম না শুনে পড়ে এসেছি। উপস্থিত জনগণের নিকট বিষয়টি শুনতে পেয়েছি। তাছাড়া থানায় তো আমি ছিলাম না কেমন করে আমাকে সাক্ষী দিয়েছে তা আমি জানিনা। আর নাসির উদ্দিন এর ব্যাপারে আমি অবগত নই, আপনি বিষয়টি ঘাটুরা খেয়া বাড়ি মহসিন মেম্বার এর নিকট জানতে পারেন।

তারপর জানতে চাওয়া হলো উক্ত মামলার ২নং সাক্ষী- মহসিন (মেম্বার) খন্দকার এর নিকট। জবাবে খন্দকার মহসিন (মেম্বার) বলেন, ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম কিন্তু এমন কথা বলবো না মোঃ নাসির উদ্দিন ঘটনাস্থলে ছিল, আমি উনাকে দেখিনাই। ততপর জানতে চাওয়া হল, তাহলে কেন মিথ্যা সাক্ষী দিলেন? সেই প্রশ্নের জবাবে ২নং সাক্ষী মহসিন খন্দকার (মেম্বার) বলেন আমাকে যে ২নং সাক্ষী করেছে এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা তাছাড়া আমি থানায় যাই নাই। তাহলে কেমন করে বলব ওনাকে কে আসামি দিয়েছে।

উক্ত ২নং সাক্ষী খন্দকার মহসিন (মেম্বার) উনার নিকট যখন জানতে চাওয়া হলো, এজহারকৃত উল্লেখে স্পষ্ট ভাবে লেখা আছে- ৩নং আসামি মোঃ- নাসির উদ্দিন ২নং সাক্ষী (আপনি মহসিন খন্দকার) কে, আসামির হাতে থাকা রড দিয়ে আপনার পিঠে সজোরে বাড়ি মেরে পিঠ ফেটে পেলে। সেই প্রসঙ্গে আপনার মতামত কি তা জানতে চাইলে, উনি হেসে বলেন- বুঝিনিতো থানার পুলিশরা, উনারাই মনে হয় দিয়েছেন। আমি এ সম্বন্ধে জানি না, থাক না এসব শেষইতু হয়ে যাবে।

তারপর যোগাযোগ করা হল উক্ত মামলার ৬নং সাক্ষী, কাজী মুখলেসুর রহমান খোকন এর নিকট। উনার কাছে জানতে চাইলে ঘটনার সময় আপনি কোথায় ছিলেন, এই প্রশ্নের জবাবে উনি বলেন আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় তারপর উপস্থিত থাকা লোক মারফত শুনতে পেয়েছি। এই মামলার ব্যাপারে আপনি কি জানেন, সেই প্রসঙ্গের জবাবে উনি বলেন আমি থানায় ছিলাম না এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।

অতঃপর মামলার ৫নং সাক্ষী নাহিদ সরকার এর নিকট জানতে চাওয়া হলো, সেই প্রসঙ্গে নাহিদ সরকার বলেন আমি ঘটনা শুনেছি এর বিষয়ে কিছু জানি না। এই কথা বলে সে ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে ফোন করবে বলে লাইন কেটে দেন।

প্রসঙ্গ:-মামলা  কখনো মিথ্যা হয়না, যেহেতু থানা সত্য, মামলার নম্বরও সত্য!

তবে, মামলার আর্জিতে যে ঘটনা বর্ণনা করা হয় তাহা মিথ্যে হলে এই সমস্ত মামলাকে বলে উদ্দেশ্যমূলক সাজানো মামলা।
এমন হয়রাণির উদ্দেশ্যে যে মামলা থানায় এফআইআর হয় তা সম্পূর্ণ বেআইনী। এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে মামলার বাদী, সংশ্লিষ্ট থানার ওসি, ইন্সপেক্টর তদন্ত ও মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা না গেলে আইনের শাসন কখনো প্রতিষ্ঠা করা যাবেনা।
পাশাপাশি, এ ব্যক্তিদের বিচার হওয়া উচিৎ বলে সাধারণ মানুষ মনে করছে।

এফআইআর করার আগে অবশ্যই মামলার আর্জিতে উল্লেখিত বাদী, স্বাক্ষী ও আসামীদের সম্পর্কে পুলিশকে শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করেন সাধারন জনগন।

By khobor

4 thoughts on “অবশেষে বের হলো সাজানো মামলা, টাকা দিলেই মামলা এফআইআর!!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *