ব্রাহ্মণবাড়িয়া.প্রেসঃ নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- ৮ ডিসেম্বর। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস। এদিন পাকহানাদার মুক্ত হয় সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি স্মরনীয় নাম। ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্থানী বাহিনীর নৃশংস হামলার পর ৮ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হবার পূর্ব পর্যন্ত পুরো জেলা ছিল রনাঙ্গন এলাকা। ১৯৭১ সালের এদিনে ৯ মাসের যুদ্ধশেষে স্বজন হারানো ব্যাথা ভুলে গিয়ে জয়বাংলা শ্লোগানে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে তোলে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলার মানচিত্র খচিত রক্তলাল পতাকা উত্তোলণ করা হয়। জেলার কসবা উপজেলার মন্দভাগ থেকে শুরু করে সিলেট জেলার মনতলা সীমান্ত পর্যন্ত পুরো এলাকায় নয় মাস ব্যাপী হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মুখ যুদ্ধ হয়েছে। চূড়ান্ত যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে ৭১ সালের ৩০ অক্টোবর সন্মুখ যুদ্ধের মাধ্যমে মুকন্দপুর মুক্ত হয়, এরপর কসবা ও আখাউড়া মুক্ত হয়। ৭ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্থানী বাহিনী চতুুুর্মুখী আক্রমনের আশংকায় রাতের বেলায় ব্রাহ্মনবাড়িয়া ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে চলে যায়। ৮ তারিখ সকালে বিনা বাধায় মুক্তিবাহিনী এবং মিত্র বহিনী শহরে প্রবেশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর যখন পাকহানাদার দখল থেকে মুক্ত হয় তখন চারদিকে ছিল ধ্বংশ স্তুুপ। স্কুল-কলেজ আবাসিক এলাকা হয়েছিল ধ্বংসের শিকার। পাকবাহিনী শহর ছেড়ে যাবার সময় কলেজ হোস্টেল, অন্নদা স্কুল বডিংসহ বিভিন্ন খাদ্য গুদামে অগ্নি সংযোগ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর মুক্ত হবার পর তৎকালীন পূর্বাঞ্চলের লিবারেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জহুর আহাম্মেদ চৌধুরী আনুষ্ঠানিক পতাকা উত্তোলন করেন। একাত্তরের শহীদের স্মরণে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে স্মৃতি সৌধ। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে থাকা বধ্যভূমি গুলো আজো পাকিস্থানী বাহিনীর নৃশংসতার সাক্ষ্য বহন করছে। দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য জেলা আওয়ামীলীহসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচী গ্রহন করেছে।

By khobor

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *