ব্রাহ্মণবাড়িয়া.প্রেস:- নিজস্ব প্রতিবেদক।
একের পর এক ডিউক, এনজেলার ভুল চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাধারণ মানুষ!অথচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার টাকা দিয়ে বহুতল ভবনসহ অনেক সম্পত্তি মালিক হয়েছেন ।
অনেক ভুক্তভোগীরা আফসোস করে বলে নিরুপায় হয়ে চিকিৎসা নিতে ডিউক চৌধুরীর হাসপাতালে আসে। এখানে এসে ডাক্তার এর ব্যবহার শুনে আরো রোগ বেড়ে যায়। শহরের মুন্সিপাড়া ক্রিসেন্ট কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা নওশীন আহমেদ দিয়া ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মারা যায়।
এই ঘটনায় রোগিনীর পিতা বাদী হয়ে গত ১২ ই নভেম্বর তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালতে ডক্টর ডিউক সহ তিন ডাক্তারের বিরুদ্ধে কোট পিটিশন মামলা করে।
মৃত্যুর পর মুখে অক্সিজেনের মাস্ক লাগিয়ে প্রসুতি মা নওশীন আহমেদ দিয়াকে (২৯) ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। সেখানে পৌছার পর জানানো হয় কয়েকঘন্টা আগেই মারা গেছেন দিয়া। এরআগে ভুল চিকিৎসা ও ভুল ঔষধ প্রয়োগে তাকে হত্যা করা হয়। অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেন দিয়ার পিতা শিহাব আহম্মদ গেন্দু। মামলার আসামীরা হচ্ছেন চিকিৎসক ডিউক চৌধুরী, অরুনেস্বর পাল অভি ও মো: শাহাদাত হোসেন রাসেল। তাদের মধ্যে চিকিৎসক ডিউক চৌধুরী শহরের মুন্সেফপাড়াস্থ খ্রীষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের মালিক।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তা নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করার জন্যে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। এদিকে আজ শুক্রবার সকালে শহরের শেরপুর কবর থেকে দিয়ার লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে উত্তোলন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, শহরের মুন্সেফপাড়া ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেন স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা নওশীন আহাম্মদ, দিয়া গর্ভবতী অবস্থায় গত ৩০ অক্টোবর খ্রীষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার আগাম ডেলিভারীর ব্যবস্থা করা হয়। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তার ১টি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিয়ে দেয়া হয়। এরপর হাসপাতালের পাশ্ববর্তী স্বামীর বাড়ীতে নেয়া হয় তাকে। ৪ নভেম্বর ভোর বেলায় দিয়ার প্রচন্ড মাথা ব্যথা শুরু হলে তাৎক্ষনিক তাকে আবার খ্রীষ্ট্রিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেয়া হয়। ওইসময়ে হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার ডিউক চৌধুরী, অরুনেশ্বর পাল অভি ও মোঃ শাহাদাত হোসেন রাসেল মৃত্যু হতে পারে জেনেও দিয়ার ভুল চিকিৎসা এবং ভুল ইনজেকশন ও ঔষধ প্রয়োগ করেন। এরপর সে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তা গোপন করে চিকিৎসার নামে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। এসময় দিয়ার স্বজনরা মেডিসিনের অভিজ্ঞ চিকিৎসক কল দিতে বললেও ডিউক ও অন্যান্য ডাক্তাররা চুপ থাকেন।
দিয়ার মৃত্যু হলেও তার মুখে অক্সিজেনের মুখোশ লাগিয়ে দুপুর ১টার দিকে দ্রুত তাকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলেন ডিউক ও অন্য দুই চিকিৎসক। দিয়ার বাবা এম্বুলেন্সে করে তার মেয়েকে নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা ল্যাব এইড হাসপাতালে পৌছলে সেখানে ডাক্তাররা দিয়াকে মৃত বলে জানান। আরো জানান, কয়েক ঘন্টা আগেই মৃত্যু হয়েছে দিয়ার। ডাক্তার ডিউক ও তার হাসপাতালের বিরুদ্ধে রয়েছে আরো নানা অভিযোগ। দিয়া ৫বছর ১০ মাস বয়সী একটি পুত্র সন্তান এবং ৪ দিনের নবজাতক রেখে মারা যান। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন জানান, তারা তদন্ত করছেন। আজ শুক্রবার কবর থেকে লাশ উত্তেলন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এই অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওই প্রাইভেট হাসপাতালের ৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।